রুবাইয়া জান্নাতের কবিতা



জীবনের তর্জমা


জীবন হচ্ছে,
গভীর রাতে অন্ধকার গিলে ফেলতে ব্যর্থ হওয়া সোডিয়াম লাইট।
উষ্ণ আলিঙ্গনে অভিবাদন করা বর্ণচোরা দুঃখও বলতে পারো।
একেকটা জীবনের একেক রকম গল্প,অভিন্ন তাদের তর্জমা।

যেমন ধরো,
গোরস্থানের কুকুরটার গভীররাতের করুণ আত্মচিৎকার,যার গর্ভে ক্রমবর্ধমান ভূর্ণ!
যে ভূর্ণটি জানে না এ পৃথিবী হাহাকারের।

অথবা ষোলোতে বিয়ে হওয়া নবযৌবনা চঞ্চল কিশোরী বউটা,প্রথম সন্তান হওয়ার সময় যে বিদায় নিলো বিধাতার মর্জিতে।

গৃহস্থের গোয়ালের বাধ্য গরুটাকেই দেখো না,যে যাবর কাটছে নিশ্চিন্তে অথচ আসছে ঈদুল আযহা নিয়ে যাবে তাকে!

সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া মানব সন্তানটি?
যে শিশুকালে হারিয়ে ফেলবে প্রিয় খেলনাটি, বাল্যকালে বাবা,কৈশোরে প্রেমিকা তারপর যৌবনে বেকারত্ব হারিয়ে দেবে তাকে!
নিশ্চিত থেকে অনিশ্চয়তাকে গ্রহণ করা মূলত প্রতিটি জীবনের সারাংশ।
তাদের অভিন্ন তর্জমা!




২.
ঘুম না আসা রাতগুলো ভীষণ রকমের বিশ্রী হয়!
চোখের পাপড়ির সাথে মস্তিষ্কের অবাধ্য চিন্তার মনোমালিন্য কিংবা একটানা কয়েক ঘন্টার এপাশওপাশ।
বিনা হার্টের অসুখেও বুকের ভেতরের তীব্র ধড়ফড়ানি কিংবা প্রথম প্রেমের নৃশংস নির্লিপ্ততার জরাজীর্ণ স্মৃতি!
অসহ্য!
 ভয়ঙ্কর নির্জনতায় অন্ধকারের গভীরতা  কিংবা মগজ ফুঁড়ে যাওয়া ঝিঁঝিঁ পোকার কণ্ঠে উচ্চারিত তীক্ষ্ণ কবিতা! 
অসহ্য!
অর্ধমৃত দুই ঠোঁটে শব্দহীন কবিতা,হার কাপানো শীতের রাতে বসন্তবিহীনতার অক্ষেপ কিংবা  প্রতিমুহূর্তে নিজের নিঃশ্বাসের ক্ষীণ শব্দের সাক্ষীতে বুকের ভিতর জীবনের উপস্থিতির জানান পাওয়া!
অসহ্য!
এতো অসহ্যতার তীব্র কোলাহল ভয়ঙ্কর। ক্রমশ শুষে নেয় জীবনের রং,মৃত্যু ভয়,শুষে নেয় আমাকে!