![]() |
ভুল
একবার বলে ফেললে...
কথারা গাছ হয়ে যায়,
দিনে দিনে বাড়ে,
ডাল পালা ছড়ায়
একবার বলে ফেললে...
পাতালে শেকড় কুন্ডলী পাকায়
অবিশ্বাস্য বেগে।
আটকা পড়ে মাটি।
যে মাটি সহজেই
উড়ে বেরাতে পারতো হাওয়ায়!
মানুষের পায়ে পায়ে
আহ্লাদী মুখ করে
ঘুরতে পারতো দিকবিদিক!
একবার বলে ফেললে...
মাটি আধিপত্য হারায়।
ক্ষমতাশীল হয়ে ওঠে--
পোষ্য শেকড়েরা;
কথারা।
অবশিষ্ট আদ্রতাটুকুও
শুষে নেয় স্মরণকোষ
সালোকসংশ্লেষণের নামে।
একবার বলে ফেললে!
উৎসুক
নদীভেজা বিকাল পেরিয়ে
এক মাঠ দৌড়ের পর
দুরন্ত শিশুর মতো আমার দিকে
আধো আধো খন্ড-প্রশ্ন ছুড়ে দেয়
দস্যি জীবন!
যেন আমি তার মা
আর সে আমার গর্ভজাত!
যেন আমি তার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য!
ভায়োলিন
রূপালী প্রশ্নের মুখোমুখি
ভাবি- অনামিকার গোড়াপত্তন,
উত্তোলিত জৌলুসের সাধ আর
খনিমান হাতুড়ি থেকে পলাতক
আমাদের অনাগত দিন!
ভাবি, জানার আছে প্রবাল পেয়ালা ছুঁয়ে
জানার আছে থিতু জুঁই-লতা ঘ্রাণ
আমাদের জানা বাকি পরস্পর কাধে-কাধ
আষ্ঠেপৃষ্ঠে ঘনঘটায় জমকালো অন্তর্লীন!
তবু অস্তিত্বের রক্ষণাবেক্ষণে
স্বতন্ত্রতায়...
আমাদের স্বপ্নগুলো মিথেল
বুদবুদে শারদাসীন!
ভাবতে ভাবতে চোখের সিঁড়িঘর ছেড়ে
আমাদের ক্লান্তি নেমে যায় চিবুক,
চোখে ঝুলে থাকে আসন্ন যত দিন...
একা বসে তবু কল্পকায়ার পাশে
অনুবাদ করি একে অপরের আন্ত:ভায়োলিন!
আরোগ্য
সংশোধনাগারে
হৃদি বসবাস,
মরিচায় ঝরে যায়
বেদনাবিলাস।
মুখ হাটে চুপচাপ
সুদীর্ঘ লেন,
চোখ থেকে খুলে রাখি
ছেড়ে যাওয়া ট্রেন।
তবুও তো সুন্দর
রাত, চাঁদ, ফুল!
নিজে হই নিজেরই
কাঙ্ক্ষিত কূল।
যেভাবে উঠছে সেরে
অন্তিম ক্ষত
এইতো বিমুক্তি!
বিজয় অবিরত।
অনুরোধ
দোহাই লাগে--
গুটিয়ে নাও লাল রুমাল,
হাত নাড়া নিষেধাজ্ঞা
আর সতর্কবাণী রাঙা চোখ।
'বসন্ত' এসেছে বহু সেজদার পর!
আয়তুল কুরসী আওড়ে আমায়
একটিবারের মতো তার কাঁধে ফুঁ দিতে দাও;
এর পর যা হয় হোক।
ধীরে এসো,
ধৈর্য্য রাখো কালবৈশাখী নখ।
'বসন্ত' এসেছে বহু সেজদার পর!
একটিবার স্নেহ বরে তাকে আশীর্বাদ করি?
সে চিরজীবী না হয়,
অন্তত দীর্ঘজীবী হোক?
অন্তত দীর্ঘজীবী হোক।
লেখক পরিচিতি
তাসমিয়াহ ইশিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
জন্ম ১১ই জুলাই ২০০১ সালে।
বেড়ে ওঠা কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
প্রিয় শখ—অবসরে কল্পনা করা।




Social Plugin