উম্মে হাবীবা মায়া'র দুইটি কবিতা


 মেঘ

অসহযোগ আন্দোলনের সময় কেউ কারো মুখে তাকায় না এমনকি নিজের দিকেও। অথচ আমি তোমার নামে পাঠ করেছি সমস্ত প্ররোচিত মানুষের ব্যথিত হবার গান। মেঘেদের দেবতার কাছে খালি পায়ে ছুটে গিয়েছি। বলেছি, মানুষের বড়ো দুঃখ হারানো যাচ্ছে আজকাল। তারা তাদের দুঃখের দিন আঁকড়ে ধরে চুপচাপ নিজেদের বুঝিয়ে নিতে পারে সুখ আসবে সুখ আসবে একদিন। এই অস্থির সময়ে সবাই শুধু ছেড়ে যাচ্ছে সবাইকে। ঠিক তোমারই মতো হে মেঘের দেবতা। আর যদি না যায় তবে ঝরে পড়ে বৃষ্টির নাম করে।


দাগ

তোমাকে প্রতীক্ষিত প্রপাতের ধারায় স্থির বসে থাকা শেখাতে পারি। নির্ধারিত সময়ের সাথে অনির্ধারিত সময় কিভাবে যুদ্ধে লিপ্ত হয় নিখুঁত বর্ণনা করতে পারি তার। অযুতসংখ্যক জোনাকের কোলাহল বাঁচিয়ে গমের শীষের করুণ গান তুলে এনে দিতে পারি বুকের ওপর। ফসলের সঙ্গমকালে মাটিকে দেখতে কেমন উদ্বেলিত হয় দেখোনি তো কখনো।


আমরা আমাদের প্রয়োজনে বিভক্ত করেছি মাটি, মান্দার। মাতাল পাগলের পিঠে ঢেলে দিয়েছি নর্দমা। তার গলার কাছে পড়ে থাকা গান শুনতে চাইনি। সে যা গাইতো সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর সময়। ভর দুপুরে স্ত্রীকে আদর করতে চেয়ে ভিখিরির মতো নতজানু হতো। তোমাকে শেখাতে পারি প্রেমে অপ্রেমে কিভাবে মানুষ হীন চরিত্রের ভাস্কর্য হয়ে ওঠে। নাগেশ্বরীর কোলে মুখ গুঁজে যখন গোপন কথা বলতে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে খড়িকাঠি মাছ। আকাশ তখন মেঘ ডেকে আনে মাঘের ময়দানে। বৃষ্টি এসে ধুয়ে দেয় শোকের সকল দাগ।