ঐশী ভট্টাচার্য'র কবিতা

ঘোড়া রোগ

তোমরা বলো, জীবন সুন্দর!

কিন্তু আমি বলি, সব ব্যতিত মৃত্যুটাই সুন্দর

মানুষ বড় নিরুপায় জীব—

হাজার চাওয়া পাওয়ার পরও

বেঁচে থাকার বায়নাপত্রে হারাতে হয় আত্মার নির্ভরশীলতাকে!

অথচ, সব পাওয়ার হাওয়াই চাদরে হারানোর শোকে মুহ্যমান হয় লালনীল সংসারের অনিকেত।

যৌবন খেয়ে বসে থাকা দাঁড় কাক—

জীবনের শেষে বসে হালখাতায় হয় শামিল!

রঙিলা কাগজের বাহারি আয়োজনে

নিমকি আর আমিত্তির ভোগ শেষে

ভুল পথ ধরে শুরু হওয়া বাকীর খাতায়

পাঞ্জা লড়ে কী পেয়ে হাত মিলায় পঞ্জিকার তারিখ ছুঁয়ে

সে রহস্য কেবল সবার অজানা।

তাই বলছিলাম, সব ব্যতিত মৃত্যুটাই সুন্দর।

জীবনের নাম যেখানে অর্বাচিন ঘোড়া রোগ।

অনাদীপ্রেম:

তোমাকে ভালো না বাসলে...

তোমাকে ভালো না বাসলে জানাই হতো না,

কতোটা দহন, কতোটা বিসর্জনের পর,

এই হৃদয় হয়ে উঠেছে এক শিল্পীর হাতে গড়া কারিগর!

জানাই হতো না,

সেই অন্ধকার বনে জোছনার ছায়ায়,

তুমি ছিলে ঠিক কতটা গভীর জলের শিকারী,

যার চোখে প্রতিফলিত চাঁদের দাহ।

তোমায় বিচলিত ভাবে খোঁজা হতো না,

জানাই হতো না, কিংবদন্তি অ্যাডামের নাগকুসুম প্রেমে

জড়িয়ে ছিল সমস্ত বেদনার ফণা।

জানাই হতো না,

ডানাকাটা ইভের চাঁদখাওয়া অমাবস্যায়

তুমি হয়ে উঠেছিলে এক ম্রিয়মান দেবশ্রীপ্রয়াণ।

বোঝা হতো না তোমার স্পর্শে লুকিয়ে থাকা

বাদুড় ঠোঁটের বিষ, সেই চুম্বনের নিপা ভাইরাস। হতো না বোঝা...

অনাদিপ্রেমের শাস্ত্রীয় কারিশমায় আঁকা

ভূগোল আর অর্থনীতির অব্যর্থ মানচিত্র,

সেই সংসারের সমস্ত খুঁটিনাটি, সবই থেকে যেত আড়ালে।

নিয়মকানুনের প্রলেপ মাখিয়ে

ভুল হয়ে থাকা হতো না,

যদি না নরককাননের অরুণিমায়

লিলিথের উপাখ্যান ভাসতো প্রতিটি প্রভাতে।

তোমাকে ভালো না বাসলে,

এসব কিছুই জানা হতো না।