১.
মগজের চিৎকার
কোন দুর্বহ অন্ধকারে কররেখার গন্তব্য বিবিধ আমলনামার হিসেব ধরে রাখে।
পরাজয় মেনে নেয় নিরীহ খরগোশ।
একটা কালো আলখাল্লার ভেতর সম্ভ্রম গুজে রেখে সহজলভ্য নদীজলে ধুঁয়ে রাখে মগজের চিৎকার।
দুই পায়ের উপর ভর করে যারা সিংহের মত হুংকার দিতে উদ্যত হয়-
তারা অরণ্যের আহ্বান উপেক্ষা করে।
সেই ভালো, এই সন্ধ্যার পর আমরা বরং জোনাকি হয়ে যাই।
২.
সহীহ ভূতনামা
মোমবাতির মৃদু আলোতে সহীহ ভূতনামা লিখতে বসেছি।
পেছনের অন্ধকার কতবার আমাকে ডাকে!
ফিরে তাকাইনি।
চোখ বন্ধ করে ভূতের হাসি আঁকতে গিয়ে যে ছবিটা দাঁড়িয়ে গেল-
তাতে একটা টিপ জুড়ে দিলে সর্বনাশের রমণী উঠে আসে সাদা দেওয়ালের ক্যানভাসে।
এই শীতরাতের উপর হেঁটে যায়
অদৃশ্য পায়ের নূপুর
অপ্রকাশিত ছায়ার গভীরতায় গা ছমছম প্রাচীন বাতাস
নিঃশ্বাসের সাথে কে যেন ফিরে আসে!
৩.
শৈশবের মার্বেল
শৈশবের রঙ্গিন মার্বেল গড়িয়ে এক পরিচিত গর্তে ঢুকে পড়ে
গ্রীষ্মের শব্দহীন দাহে আমরাও যেভাবে অনড় বৃক্ষের ছায়াতল খুঁজি
বাতাসের প্রাচীন শো শো আওয়াজ পেতে কেউ কেউ সৈকতমূখী হয়
দেখে, গাঙপাখিদের ঠোঁটে গান তুলে দিয়ে কতিপয় ডলপিন ভবঘুরে জেলেদের সাথে সখ্যতায় মেতেছে
এ শিহরনের পর্যটন স্নানরত বালকের চোখে বিস্ময় খেলিয়ে যাচ্ছে
আহারে শৈশব, ধূলোমাটির নূপুর পরে
দৃষ্টির এপার-ওপার থেকে যে বাতাসের বিদ্রুপ তাড়াও
তার সাথে সন্ধ্যের জোনাকিরা খেলতে গেলেই একটা কালো ঘোড়া হয়ে যাচ্ছো
বুকের ওড়না সরিয়ে বালিকা ঈষৎ লজ্জার ভান করে যেদিন ডেকেছিল কাছে
গর্তে পড়া মার্বেলের মতন মুহূর্তের ব্যবধানে বালক শৈশবউত্তীর্ণ এক দুর্দান্ত প্রেমিক হয়ে যায়।
৪.
কেবল আমাদের চোখ দুটোই উড়তে যায়
১.
হাতের মুঠোয় কত আর আলো ধরে রাখা যায়!
পর্দা সরিয়ে সব আলো চোখে নিয়ে সকালের দিকেই হাঁটি, চলো।
২.
শূন্যের সম্মোহন তীব্র হলে
বাতাসের ওড়নায় টান পড়ে।
উড়ানের চিহ্নহীন পথে উঁকি দেয় যেন মৃত্যুঞ্জয়ী এক দিগন্তের নকশা ।
৩.
আমাদের আদতে কোন ডানা নেই,
গন্তব্য ধরে কেবল আমাদের চোখ দুটোই উড়তে যায়।
৪.
আস্তিন আলগা করে পালকগুলো গুজে রাখি; অথচ-
অনশন ভেঙে সব পাখি উড়ে গেল সন্ধ্যার দিকে।
৫.
যাত্রা ও যাপনের খুচরো ইতিহাস
অন্ধ এক সৈনিকের মতন
এলোপাতাড়ি তরবারি চালাই।
যে কালো ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে উন্মুখ শূন্যতার দিগন্ত ছেড়ে যাই
তার ওপারে শীতলতা নাকি উত্তাপের হল্কা আছে কিছু তো জানা নেই!
ইতিহাসের ছাই হাতে মেখে বিষাদের স্ফুলিঙ্গ অতীত করি।
কোমল মৃত্তিকায় বানানো কাকের মুর্তি
অকস্মাৎ প্রান পেয়ে যদি উড়াল দেয়
আমাদের বিস্ময়যাপন বেড়ে যায় বহুগুন।
মরুঝড়ে হারিয়ে যাওয়া পূর্বপুরুষের খাজানার সন্ধানে উপেক্ষা করি যতসব চিলচিৎকার।
নিশানা ছুটে যাওয়া তীরের ডগায় লেগে থাকা রাগ আমাকে পড়ে ফেলে এবার।
দুর্বৃত্ত বাতাসে তবু কিছু বিশ্বাসের আগুন জ্বালিয়ে এগিয়ে যাই।
অতঃপর আমার দিগ্বিদিক যাত্রাকে স্বীকার করে নেয় অনতিবর্ষার শীতলজল।
Social Plugin