আইনুন নাঈমা'র কবিতা


অদৃশ্য মায়া

কোনো এক বিষন্ন সন্ধ্যায় 
আকাশ জুড়ে মেঘের ঘনঘটা 
ঝড়ো হাওয়ায় ঝাউবনের মেকি কান্না ;
আউষের ক্ষেত্রে জুড়ে উত্তাল ঢেউ ,
পাখির ঠোটে নীড় হারাবার শোক।  
আহত ফড়িং খোঁজে ফিরে ডানা। 

দুহাত মেলে একাকী দাঁড়িয়ে 
কীর্তিনাশার তীরে। দুকূল হারা এক এলোকেশী 
মেঘের মায়ায় হারিয়ে গেছে কায়ার ছায়া। 
কলিজা খুবলে কবে বলে 
মাথার উপরে রক্ত ঠুটা শকুনের উল্লাস 
গলে পঁচা মাংসের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে
 কাকদের অষ্টপ্রহর মাতামাতি। 

প্রায় নিভে যাওয়া অঙ্গার 
ক্ষণে ক্ষণে চমকে উঠে উত্তপ্ত নিঃশ্বাসে
বিশ্বাসের চরম সংকটে। 
আকাশ থেকে নেমে আসা আগুনের জিহ্বাটাও 
মুখ ফিরিয়ে নেয় আমার উত্তাপে !
আর নগন্য তুমি ?
ওখানেই দাড়াও ,কাছে এসোনা 
কাছে ঘেষোনা
কাছে আসলেই ঝলসে যাবে 
তোমার মিথ্যে আভিজাত্য। 
আধিপত্যহীন তালপাতাল সেপাই !
যে করে আলিঙ্গন ,সে কখনোই মেনুকা উর্বশী নই। 
দুর্ভিক্ষেয় ভিক্ষের ডালায়
আজলা ভরে যে দেয় প্রেম 
সে কি হয় সতী সীতা ?




প্রিয় ....

তোমার নির্বাক নীরবতায়
আমি গলে যাওয়া মোম
বরফ গলা নদী
উবে যাওয়া কর্পূর। 
আমি ক্রমশ ডুবে যাই 
নিকষ কালো আঁধারে 
তেল ফুরিয়ে আসা 
প্রদীপের মতো 
বিলীন হওয়া এক দ্বীপের মতো .....
যে দ্বীপ কোনোকালেই ঠাঁই পাইনি
তোমার মানচিত্রে। 
কর্ণগুহরে লেপ্টে রেখেছো এটো স্মৃতি 
ক্ষতি নেই বলে শুনলেনা আমার 
যতিহীন বিলাপ। 
উপবাসী চোখ 
নীরবে কাঁদুক 
তবু অজানাই থাক
কবে দিয়েছি নির্বাসন 
মনের আসন হতে। 
কতটা আগুন পুষেছি বুকে 
যদি পেতে আঁচ. . . . .
 চন্দনের অঙ্গারে নিভে যায় আমার 
সিঁদুরের সাঁজ। 
উত্তরের হাওয়ায় থরো থরো কাঁপে
পুরনো উত্তরি
জীর্ণ জানালা 
বিদীর্ণ হৃদয় 
অবাক তাকিয়ে রই
আবির রাঙা আকাশের সাথে
 তোমার কতটা মিতালি 
কুয়াশার কাফন চিরে শুনি মধুর আলাপন। 
শুক্তোর বুক চিরে দিলাম 
মুক্তোর ডালি 
তবু সুখী হও
সুখী হও প্রিয় 
জীবন নাট্যের শেষাঙ্কে।