ইসতিয়াক আহমেদ হৃদয়ের দুইটি কবিতা

জ্যামিতিক দুঃখ

মানুষ যখন জমি মাপে তখন মনে হয়

নকশার দাগ নম্বর গুলো নিয়ে তুমি হিসেব কষছো আমার বর্গাকার বুকে।

শতক মেলানোর অংক লিখে আঁকলে এক অদৃশ্য ত্রিভুজ। এরপর ভাগ, গুণ, যোগ, আর পাশ্বর্বিক বিয়োগ। কি সুন্দর সব অংক—

তোমার পাকা হাতে মিলে যায় সব বিরোধ ভূমি!

তুমি বললে, মাপযোগ বুঝতে হলে তোমাকে জানতে হবে ক্ষতময় ত্রিভুজের নির্ভুল কষ্ট।

যেমন ধরো আমার চোখ দুটি বিন্দু। আর সে বিন্দুতে তুমি অসংখ্য বিষাদময় বৃত্ত আঁকাতে পারো। সেখানে কোনো জ্যা নেই—

বহিঃস্থ সকল বাহু উৎপন্ন করছে আপেক্ষিক রোমান্সের জ্যামিতি।

কোনদ্বয় পরস্পর সমান হলেও আমাদের দাম্পত্য বাহুদ্বয় পরস্পর অমান্তরাল।

কেননা তোমার ত্রিকোণমিতিক বুকের বৃত্তে কেবল ছেদ করে আমার জ্যামিতিক দুঃখগুলো!

বিশৃঙ্খল বেঁচে থাকা

বেঁচে থাকা আজকাল ; বিশৃঙ্খলা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হৃদয়ের বেদি ব্যাথা, ঘুমের অসুখ, আহারের অরুচি,

বিছানায় ছন্নছাড়া অনিয়মের ছড়াছড়ি—

বয়সের ক্লান্ত লোমে বেড়ে চলেছে ক্রমাগত।

দিনরাত কবিতার টেবিলে তৈরী হচ্ছে

তোমাকে নিয়ে বাঁচার গল্প!

তবু ও স্বপ্নের মধ্যে জেগে থাকার স্মৃতি

তোমার নৈপথ্যে নিশীথের হট্টগোল।

ভাঙা চুড়ির আওয়াজ, মোলায়েম স্পর্শ,

দুঃখের ভর সমেত একটি শরীর—

আর বলো ক'জন নারীই বা নিতে চাইবে?

সস্তা প্রেমের মূল্য দিয়ে বলো, আজকাল আর

ক'জন প্রেমিকা দামী দামী স্বপ্ন কিনে?

কে জানে—

কবে শেষ হবে আমার এই দুর্ভেদ্য জীবন!