নাদিয়া জান্নাতের একগুচ্ছ কবিতা


 ১. 
রেইনলিলি

হাল্কা গোলাপি আভা তীব্র বাতাস আর বিন্যাস কুশলতায় লিখে যাচ্ছে নতুন ভ্রমণ। অফুরন্ত দেখার পিপাসা নিয়ে সমস্ত রাস্তাঘাট ফাঁকা ফাঁকা। আপাতদৃষ্টিতে বসন্ত মনে হলেও এ ঋতু মূলত বরষা।
সমূহ সম্ভাবনার ভেতর একটা ট্রেন শেষঅব্দি অতিক্রম করে ফেলেছে শহর।
কণ্ঠনালীর পাশে কল্পনাপ্রসূত পিপাসা আমার, আমাকে নিয়ে যাচ্ছে তীব্র বিরহে।
যদিও তুমি, বৃষ্টিহীন ধ্বংসস্তূপে ধূলোঝড় নিয়ে ফিরে আসা প্রত্যাখ্যান, তবু আমার ধাবিত প্রেম, বন্ধ চোখের ভেতর থেকে তোমাকে ভেবে কেঁপে ওঠে।
ভাঙ্গাচোরা রাস্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা তোমাদের বাড়ি। বারান্দায় হালকা গোলাপি আভা। কাকলি কোমলতায়, ফুটে থাকা রেইনলিলি, বৃষ্টিবাতাসে সংকটময় ঈর্ষা তার প্রতি।

২. 
কদম

ওরে আমার বিরহদিনের কুসুম বাগান
ঝমঝমাঝম বিষ্টি এলে,
বুকের ভেতর জাগো
শূন্য বায়ু, ফুৎ
কুপি নিভুনিভু বিপর্যয়ের বাদল নামে,
বিস্মরণে ঘনীভূত মেঘগুলো তাই
বিখ্যাত সব ব্যাধির মতো
বাষ্পঘন কান্না এসে ঝাপসা করে দৃষ্টিসীমা
অহেতুক সব ভাল্লাগেনা বাড়তে থাকে বাহুর মাঝে
অগত্যা তাই, ল্যাজ নাড়ানো কুকুর আমি
তুমি আমার জ্যান্ত মালিক
তোমার নেশায় মত্ত হয়ে তোমায় আমি
ডাকতে থাকি, বর্ষা কাতর ফুলের নামে

৩.
দোলনচাঁপা

ফুলের দোকানে দোলনচাঁপা পাওয়া যায় না, এমন একটা শহরে কাঁচা আমের ঘ্রাণকে দোলনচাঁপা বলে ভ্রম হয়।
উপশহরের পথ ঘুরে ঘুরে, পথসঙ্গীদের হাতগুলো দেখি। বর্ষা সন্ধ্যায় ফুলহীন হাতগুলোকে বিপজ্জনক মনে হয়।
সন্ধ্যায়, ফুটপাতে থেতলে যাওয়া আমের ঘ্রাণ পেয়ে ফুল নিয়ে ঘরে ফেরা রাত মনে পড়ে।
হাসপাতালের কোরিডোরে লম্বা সময় কাটিয়ে দেয়ার পর, একথোকা দোলনচাঁপা আমাদের বুকের ভেতরের হাড়গুলোকে হিম করেছিলো।
আমরা সারারাত বসেছিলাম বারান্দায়।